Monday, October 14, 2019

আমরা আসলে কী চাই?

আমরা আসলে কী চাই?

এক মেডিকেল কোচিং সেন্টারের মালিক ডাঃকে ধরা হয়েছে। গত ১৮ বছরে ৪০০০ ছাত্রকে সে পাবলিক মেডিকেলে অবৈধভাবে চান্স পেতে অর্থের বিনিময়ে কাজ করেছে।
ঘটনাটা কী ভয়াবহ! মেডিকেলে চান্স পাওয়া এই গুরুর বিষয়টা কোথাও কোন আলাপ নেই। দেশ নিয়ে বড় বড় কথা বলা সবাই চুপ। লম্বা লম্বা বোলচাল দেয়া, সোশ্যাল মিডিয়া গরম করা লোকজন যাদের মধ্যে আমাদের অনেক প্রিয় ডাক্তাররাও আছেন, সবাই যেন মুখে কী দিয়ে অন্য আলাপে ব্যস্ত!
এক একজনকে চান্স পাওয়াতে গড়ে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছে। ৪০০০x৪০ লাখ টাকা = কত টাকা?
এই যে ৪০০০ ভেজাল ঢুকে গেলো, যাদের পেছনে রাষ্ট্রের আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে, এর দায় কে নিবে?
এই যে ৪০০০ ভালো বা যোগ্য ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করেছে, তার দায় কে নিবো? যে ভালো ৪০০০ ছেলেমেয়ের ডাক্তার হওয়ার কথা ছিলো, তারা না হয়ে টাকা দিয়ে রেজাল্ট পালটে দিলো সেইসব অশুভ অমানুষগুলো।
এরাই তো ঔষধ কোম্পানির দালাল হবে। ঔষধ কোম্পানি ৪০০০ ফ্রি দালাল পেয়ে যাবে। যারা ঔষধ কোম্পানির হাতে হাজার কোটি টাকা তুলে দিবে আর মানুষকে নিঃস্ব করে লাখ কোটি টাকা চুষে নিবে ক্লিনিক মালিক, দালাল সবাই মিলে।
কী ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়ে গেছে এই ডাক্তার, এবং ডাক্তারদের একটি বড় জোট এই অপকর্মে জড়িত।
অথচ কোথাও শব্দ নেই। র‍্যাব, গোয়েন্দাবিভাগ তদন্ত করছে। কিন্তু এত বছর চললো কীভাবে এই ভয়ংকর অপকর্ম? আমরা কেউ কথা বলছি না কেন?
এই যে আমাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড - এর শেষ কোথায়? এই যে আমাদের ভণ্ডামি এর শেষ কোথায়?
আমাদের ভণ্ডামির জন্যেই বড় বড় দানবরা তৈরি হচ্ছে। আমরা কেউ পিছিয়ে নেই।
চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ - সবাই লুটপাট করে খাচ্ছে এক মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত প্রিয় বাংলাদেশকে।

Saturday, August 3, 2019

নাগরিক সংকট

নাগরিক সংকট!
সিএনজিতে যাচ্ছি। গুলশান-১ চেকপোস্টে থামালো। পুলিশ আমার ব্যাগ ৩ বার চেক করলো। আমি শুধু তাকিয়ে দেখছি। মেডিটেশন করা মানুষ। সহজে রাগি না।
সিনিয়ির যে ছিলেন, তাকে ডাকলাম। বললাম, ভাই, উনি কি সুস্থ আছেন? এক ব্যাগ ৩ বার চেক করছেন! যাই হোক, উনি পরিচয় জানতে চাইলেন। পরিচয় দেয়ার পরে কয়েকবার সরি বললেন।
বললেন, "আপনি কোন ব্যাচ? আমার ছোটোভাই ৯x ব্যাচ।" বুঝলাম আমার ৫ ব্যাচ ছোটো।
"আমার ভাই রোডস অ্যান্ড হাইওয়েতে আছে। ৩ কোটি টাকা দিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে বাড়ি করতেছে!"
আমি বললাম, আপনার ভাইয়ের বেতন কত?
গর্বে ভরা চেহারাটা মুহূর্তে ছাই হয়ে গেলো।
আমরা নাগরিকরা 'সবাই খারাপ, আমি ভালো' এক সিন্ড্রোমে আছি।
দোস্তো বলিস না, এই শালা ট্রাফিক পুলিশ, শালারা দুই টাকারও ঘুষ খায়!
দোস্তো, তোদের ফ্লাটে কত খরচ পড়েছে? এই সব মিলে ৯৭ লাখ।
তোর বাবা তো ট্যাক্সে আছে, বেতন কত? চেহারা আবারও ছাই।
ওদিকে লায়লা তার বয়ফ্রেন্ডকে বলছে, কাবিন কিন্তু ৩০ লাখ টাকা হতে হবে। (বয়ফ্রেন্ড ২৮ হাজার টাকার বেতনের চাকুরি করে!+) না হলে আমার প্রেস্টিজ পাংকচার! ফেবুতে পোস্ট দিয়েছে, "যে ছেলে যৌতুক চায়, তাদের না বলুন!"
এদিকে মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। ছেলে কলেজের টিচার, আরেকজন পিডাব্লিউতে চাকুরি করে। মেয়ের বাবা পরেরজনে মত দেয়ায় মেয়ে বলছে, " বাবা তোমার পছন্দ সেরা"!
এক আত্মীয়ের বাসায় গেলাম। সারা জীবন সততার বুলি আউড়িয়েছেন। মেয়ের জামাই চাকুরি করেন সিটি কর্পোরেশনে। খুব গর্ব করে বলছেন, তার মেয়ে ঘরের ফার্নিচার ৪/৫ বছর পরেই পালটায়। মেয়ে খুব সৌখিন। ৮০ লাখ টাকায় ফ্লাট কিনে আরও ৫০ লাখ টাকা খরচ করছে ইন্টেরিয়র কাজে!
জিজ্ঞেস করলাম, ভাইজান, জামাইয়ের বেতন কতো?
মুখটা আবার সেই পুলিশ অফিসারের মতো ছাই হয়ে গেলো।
আমরা এত নষ্ট হয়েছি, এত নষ্ট হয়েছি যে, আমাদের কোন লজ্জা নেই। ঘুষ আমার অধিকার, কিন্তু কন্ডাকটর ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা চাইলে, "এগুলা মানুষ না। এই টাকা খাইয়া এরা কিছুই করতে পারে না। মানুষের টাকা মাইরা কিছুই করতে পারে না।" অথচ একটু আগেই মোবাইলে আলাপ করছিলো, একটা বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরির জন্য ৯ লাখ আর ১০ লাখের ঘুষের আলাপ!!
কন্ডাকটর গলা কাটছে। গলা কাটছে শিক্ষিত দুর্বৃত্তরাও। শিক্ষিতদের গলাকাটা বড় নির্মম, দেশটাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়।
কন্ডাকটররা একটা নিদারুণ সত্যি কথা বলে,
"আফনেরা যে কলমের খোঁচায় কুটি কুটি টাকা মাইরা খান, হেই হিসাব তো আমরা নেই না!"
কথা সত্যি এবং নিদারুণ সত্যি।
আজকে কিছু অসভ্য শ্রমিকদের দেখলাম অ্যাম্বুলেন্সেও কালি দিচ্ছে, আটকাচ্ছে।
সেই অ্যাম্বুলেন্স দেখে মনে পড়ে গেলো এর চেয়ে ভয়াবহ অসভ্য গোষ্ঠীর কথা। বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির দালালদের কথা, যারা অতি উচ্চ শিক্ষিত এবং যাদের পেছনে রাষ্ট্রের বিলিয়ন ডলার খরচ হয়। মেয়াদউত্তীর্ণ ঔষধ, আইসিইউতে রেখে গলা কাটার সেই সব অমানুষদের কথা।
মানুষ হয়তো আছে। সংখ্যাটা কম।
শেষ করি, দুটো উদাহরণ দিয়ে। দুটো চকচকে চেহারার কথা!
শরীয়তপুর নামে একটি জেলা আছে। যেখানকার লাখ দুই ছেলে ইটালি থাকে। সেই এলাকার কোন মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব যদি ইটালির ছেলের হয়, খুশিতে সবার চেহারা চকচক করে (ছেলে বুড়া, ধুরা, বিয়াতো, দুই পোলার বাপ হইলেও সমস্যা নাই)। তবে এই মানুষগুলো খুব সাধারণ।
আর একটা চকচকে চেহারা আপনারা দেখবেন! যারা অসাধারণ!! 
মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে।
তা কোথায় হলো, ছেলে কী করে?
যদি ঘুষের ডিপার্টমেন্টের হয়, 
দেখবেন মেয়ের বাবা মা, ভাই বোন আর মেয়ের চেহারা খুশিতে কেমন চকচক করে!!
অথচ এই যে অরাজকতা, এই যে ভেজাল জিনিস, এই যে উচ্চমূল্য, এই যে গলাকাটা সেবা, এই যে পেনশনের টাকা তুলতে ফাইলের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে জুতার তলা ক্ষয় হয়ে যাওয়া, এই যে পরীক্ষায় ভালো করলেও চাকুরি না হওয়া, এই সবের মূলে তো ওই যে যেখান থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলে জিহবা চকচক করে, চেহারায় (নোংরা) খুশির ঢেউ উঠে, সেই দুর্নীতিবাজ শুওরদের কারণে।
বিখ্যাত এক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, "শুওরের বাচ্চাদের অর্থনীতি"! এই শুওরের বাচ্চারা কারা?
এই লেখা পড়ে পরে যাদের চেহারায় চপেটাঘাত পড়বে, ছাই হয়ে যাবে, তারা।

২৮ অক্টোবর ২০১৮ তে লেখা  আমার এই লেখাটি লক্ষ লক্ষ মানুষ পোস্ট করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

Tuesday, July 16, 2019

Monday, April 17, 2017

বসে থাকলে, আপনার ক্যারিয়ারও বসে থাকবে। দৌড়ান, আপনার ক্যারিয়ারও দৌড়াবে।

(তবে কোথায় পৌঁছার জন্য দৌড় দিবেন সেটা কিন্তু ঠিকভাবে ঠিক করা চাই!)
পাশের বাড়ির ছেলেটা ফটোগ্রাফি করে মাসে দুই লাখ টাকা আয় করে, ওয়াও! ফটোগ্রাফি করে এতো টাকা! তাহলে তো আমাকেও ভর্তি হতে হয়। খালি শাটার টিপ দিয়েই এতো টাকা! তাহলে আমিও পারবো। দে দৌড়!
বেইলি রোডের পিঁয়াজু মামা খালি পিঁয়াজু বিক্রি কইরা ঢাকায় ৪টা বাড়ি করছে! দারুণ তো, তাহলে কি ফটোগ্রাফি শিখবো নাকি পিঁয়াজু বেচবো! পিঁয়াজু বানানো তো আরো সোজা! ঢাকায় ৪টা বাড়ি করা ঠেকায় কে!দে দৌড়!
লিটন দাস, জাবি দেখে পাশ করে মাসে ১০ লাখ টাকায় কামায়। কীসব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করে! এইটাতে তো দেখি টাকা আরও বেশি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট , এইটা কোন কাজ! মাসে ১০ লাখ, ঠেকায় কে, তাহলে ফটোগ্রাফি আর পিঁয়াজু না বেইচা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করি! দে দৌড়!
পাশের বাসার মামুন ভাই, বুয়েট থেকে পাশ করে ঢাকায় ১৩টা ফ্লাট কিনছে, ইস ছেলেটা যদি বুয়েটে চান্স পাইতো, তাইলে আর চিন্তা কী! ছেলে্রে কড়া নির্দেশ , “তোরে বুয়েটে পড়তেই হইবো”! ছেলেও দিলো দৌড়! বুয়েটে পড়তেই হইবো। নাভিদ ভাই বলছে, বুয়েটে পড়লে দেশের সেরা সুন্দরীরা তোমার দরজায় আইসা সিরিয়াল দিয়া নক করবো আর আমেরিকার ভিসা ফ্রি! দে দৌড় – একদিকে বড়লোকের সুন্দরি মাইয়া, আরেকদিকে দেশে থাকলে, একটু সিনিয়য় হইলে বছরে ২৫/৩০ কোটি টাকা ব্যাপার না। তাইলে ফটোগ্রাফির দরকার নাই, পিঁয়াজু বিক্রির দরকার নাই, ইভেন্ট ম্যনেজমেন্টেরও দরকার নাই। বুয়েটেই পড়তে হইবো। দে দৌড়!
ভাই শুনছেন, ডা. শায়লা ২৩ লাখ টাকা বেতনে আপেল হাসপাতালে জয়েন করেছে! এরকম হাসপাতাল দেশে আরও হইতেছে। মাইয়ারে ডাক্তার বানাইতেই হইবো! মাসে ২৩ লাখ খালি বেতন! এরপরে তো ফ্ল্যাট, গাড়ি তো ঔষধ কোম্পানি কিন্নাই রাখছে! বছরে বছরে আবার ব্র্যান্ড চেইঞ্জও কইরা দেয়! আরে বাপরে বাপ! মাইয়ারে কড়া নির্দেশ, “সখিনা, তোরে ডাক্তার হইতেই হইবো, এইটা তোর দাদার বাপের স্বপ্ন ছিলো!”, অথচ সখিনার স্বপ্ন হয়তো ছিলো অন্য কিছু। একবার ডাক্তার হইতে পারলে আর ঠেকায় কে! দে দৌড়!
ওদিকে খবর পাওয়া গেলো, রাজউকের দারোয়ান কোটি কোটী টাকা, কাস্টমস/রাজস্ব বিভাগের পিয়ন সিলেটে কোটি কোটি টাকার রাজপ্রাসাদ বানাইছে!ওমুক থানার ওসি, ১৩টা গার্মেন্টস দিছে, জমি কিনছে শত শত বিঘা!ওদিকে খবর হলো! পানি সাপ্লাইয়ের পাইপ কেনার ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে ঘাপলা দিয়া ৩ হাজার কোটি টাকা হাওয়া করে দিছে প্রধান প্রকৌশলী!
তাইলে কী হওয়া উচিত? ঠিক আছে, এক প্রোজেক্টে যদি ৩ হাজার কোটি টাকা মেরে দেয়া যায়, তাইলে আর চিন্তা কী! যাই এবার পানি সাপ্লাই দেয়ার প্রধান প্রকৌশলী হইতেই হবে। ডিসিসান ফাইনাল!
দে দৌড়!
কথায় কথায় ভুলে গেলাম, আসলে আমি কী হইতে চাইছিলাম! কোথায় যাওয়া দরকার ছিলো! গেলাম কোথায়! ব্যাংকে টাকার অভাব নেই, কিন্তু তারপরেও আমি অভাবগ্রস্ত!
সেই অভাব মনের শান্তির অভাব, যার অভাবে আসলে জীবনের ষোল আনাই মিছে। মিটার রিডার কোটি টাকার মালিক, শিক্ষাভবনের দারোয়ারের ইনকামও বেসুমার! সরকারি চাকুরি মানেই এক একটা ব্যাংক! টাকার কোন অভাব নেই।
কিন্তু আমারও একটা স্বপ্ন ছিলো, সেই স্বপ্নের খবর কী? স্বপ্নকে কবর দিলে, সে আবার জেগে উঠবে! সেই স্বপ্নের পেছনে দৌড়ানোটাই দরকার ছিলো, খুব দরকার ছিলো! দৌড় দেয়ার আগেই ঠিক করতে হবে, ঠিক কোথায় দৌড় দিতে হবে। জায়গাটা ঠিক করতে পারলে, ভালোভাবেই টাকা আসবে আর শান্তিও থাকবে।
দৌড়টা দিতে হবে, তবে ভেড়ার পালের মতো উদ্দেশ্যহীন নয়, মানুষের মতো।

Saturday, June 27, 2015

গণ আদালত থেকে গণজাগরণ মঞ্চ এবং ঘাতকদের ফাঁসি : শহীদ জননীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের দায়।

৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের পরে আরো একটি বড় আন্দোলন গড়ে উঠে বাংলাদেশে। আমার মতো যারা এখন ৪০+ নাগরিক তাদের হৃদয় থেকে 'ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র সেই মহান আন্দোলনের ঘটনাবলি কখনোই মুছে যাবে না। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই আন্দোলনে ছুটে যেতেন শহীদ জননীর ডাকে। সারা জাতি একতাবদ্ধ হয়েছিলো ৭১ এর ঘাতকদের বিচারের জন্য। আর গণ আদালতের রায়ের দিনে যত লক্ষ মানুষের সমাবেশ হয়েছিলো, ৭১ এর পরে এতো মানুষ কোন সমাবেশে হয়েছিলো কিনা জানি না।
সেই আন্দোলনে আমার মতো যারা নিয়মিত গিয়েছিলেন, তারা সবাই যেতেন প্রাণের টানে। আন্দোলনের এতই শক্তি ছিলো আমার মতো ঘরকুণো মানুষগুলোও কাতারে কাতারে ছুটে যেতো। সেই আন্দোলন নিয়ে যতটা ইতিহাস লেখা প্রয়োজন ছিলো, হয়তো তার জন্য সময় লাগবে।
কিন্তু মহান সেই আন্দোলনের দাবি কিন্তু সত্যি সত্যি এই বাংলার মানুষ আদায় করছে। হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সেই আন্দোলনে যারা ছিলেন তারা সম্ভবত ঘরে থাকতে পারেন নি, গণজাগরণ মঞ্চের সেই আন্দোলনে। আমিও পারি নি। সেই আন্দোলনে নিয়মিত যাওয়ার জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক আর্থিক এবং নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার মানুষ নানাভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। অনেকেই চাকুরিও হারিয়েছেন।
কিন্তু কেনো গেছি? ওই যে শহীদ জননী হৃদয়ে যে বীজ বপন করে দিয়েছেন, তা তো বয়সের সাথে সাথে আলো বাতাসে ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে।
কেন দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অপরিহার্য, তা তো বুঝিয়েছেন শহীদ জননী। পাকিস্তানী দালালদের চিনতাম কীভাবে? এরা শহীদ জননীকে 'জাহান্নামের ইমাম ' বলতো। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস - বাংলার মানুষকে শহীদ জননী তাদের বিচারের যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তার মৃত্যুর দুই দশক পরে সত্যি সত্যি তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আমরা যারা অসম্ভব মনে করতাম, শহীদ জননী তা সম্ভব বলতেন এবং তিনি বলতেন বিচার হতেই হবে এবং হবেই। এবং বিচার এখন ঠিকই হচ্ছে।
আমরা হয়তো অনেক কিছু ভুলে যাই। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন যখন শুরু হয়, গিয়ে দেখি সেখানে শহীদ জননীর কোন কথা নেই, তার ছবি নাই - অনেকের ছবি সেখানে আছে। এই ফেসবুকেই তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আন্দোলনের ৭ম কী ৮ দিনে শহীদ জননীর ছবি শোভা পায়। এবং আস্তে আস্তে তা কেন্দ্রিক হয়ে উঠে। কিন্তু আমার কাছে ওই ৭-৮ দিন খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ওই কয়েকদিন কী করে শহীদ জননীকে ভুলে আন্দোলনে চলেছিলো?
একটা আন্দোলনের ফসল পেতে আমরা আড়াই দশক অপেক্ষা করলাম এবং এটি একটি অসাধারণ সফল আন্দোলন। ঠিক ২০০৭ সালেও বিশ্বাস করা অসম্ভব ছিলো যে মহা প্রতাপশালী ( এবং যাদের বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে) ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এই দেশে!
সেই অসম্ভব ঘটনা ঘটাতে যিনি কোটি মানুষের হৃদয়ে আশা জাগিয়েছিলেন - তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম।
এখন সময় হয়েছে, শহীদ জননীর কাছে এ জাতির অনেক দায় আছে, ঋণ আছে - তা কিছুটা শোধ করার।
অনেক কিছুই তার জন্য আমাদের করতে হবে। আপাতত একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাই তাঁর নামে যেখানে ৭টি হল থাকবে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠদের নামে।
শহীদ জননী ঘুমিয়ে আছেন, আমরা জেগে আছি। ৭১ এর ঘাতকদের বিচার অব্যাহত রেখেই আমরা তার আত্মাকে শান্তি দিতে পারবো। এ বিচার অব্যাহত রাখাও দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার পারি দেবার মতোই।
সাত সাগড় রক্তের বিনিময়ে যে জাতি স্বাধীনতা এনেছে, সেই জাতি ঘাতকের বিচারে আরো ত্যাগ স্বীকার করবেই করবে, তবু যে আগুন শহীদ জননী জ্বালিয়ে গেছেন, ঘাতকের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে অগ্নিশিখা জ্বলবে আমাদের চেতনায়।

Monday, May 25, 2015

শুভ উদ্যোগ -৩ : ‘কমিউনিকেশন স্কিলস ও ব্র্যান্ডিং’


যোগাযোগ দক্ষতাই ব্যক্তিজীবন, কর্মজীবন, সামাজিক জীবন - তিন ক্ষেত্রেই সাফল্যের প্রথম চাবি। আপনি জীবনে যাই করুন না কেন আপনার উন্নতির প্রথম চাবি , ‘কমিউনিকেশন স্কিলস ও ব্র্যান্ডিং’। সেই চাবি থাকলে জীবনের যে কোন ধাপে, যে কোন সময়ে, যে কোন ক্ষেত্রে উন্নয়নের দরজাগুলো আপনি সহজেই খুলতে পারবেন। আপনি এগুতে থাকবেন আর প্রশান্ত হৃদয়ে আপনার আত্মবিশ্বাস থাকবে তুঙ্গে। তো সেই স্কিলসগুলো জানতে বা শিখতে চান , অথবা আপনি অনেক ভালো, আরেকটু শানিত হতে চান এই বিষয়ে? তবে দেখা হবে, ১২-১৩ জুন ২০১৫ এ।
সোশ্যাল মিডিয়া এখন সবার ব্র্যান্ড গড়ার বিশাল সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে নিজের সাফল্যের জন্য কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তাও জানবেন এই দুই দিনের সেসনে।
যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে আপনার সাইকোলজির ধারণা খুব জরুরি, যেটি আমরাই প্রথম চিন্তা করেছি - দুই এর মিশ্রণেই দক্ষতা বাড়বে। দুদিনের এত সহজ সেসনগুলো (১৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে যা তৈরি করা হয়েছে) বাংলাদেশে আর কোথাও শেখার সুযোগ নেই। যারা রিসোর্স পারসোন থাকবেন তারা একটি পয়সাও এখন থেকে নেন না বরং খরচের একটা অংশ বহন করেন। এটি আমাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। তবে আপনাদের নিজেদের খাওয়া এবং ভেন্যু ভাড়া বহন করতে হবে। যেটা আমরা প্রত্যেকই প্রত্যেকেরটা দিয়ে থাকি।
বিস্তারিত জানতে , যোগাযোগ nizam160374@gmail.com

আমরা আসলে কী চাই?

আমরা আসলে কী চাই? এক মেডিকেল কোচিং সেন্টারের মালিক ডাঃকে ধরা হয়েছে। গত ১৮ বছরে ৪০০০ ছাত্রকে সে পাবলিক মেডিকেলে অবৈধভাবে চান্স পেতে অর্...