Monday, July 25, 2016

‘২০১৬-২০২৫’ – বিস্ময়কর উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ।

৫ কোটি যুবক তৈরি। আছে সামর্থ্যের তুলনায় অনেক বিদ্যুৎ। রফতানিতে বিস্ময়। বিদেশী বিনিয়োগে রেকর্ড। গড়ে উঠছে দেশীয় মেগা কর্পোরেট। চার লেইন ঢাকা- চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড। আসছে পদ্মাসেতু। মাছ উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ। খাদ্যশষ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পোশাক রফতানিতে হতে যাচ্ছি বিশ্বের শীর্ষ দেশ।
নানা ঘাত প্রতিঘাতে ৪৫ বছর পেরিয়ে আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে চলে এসেছি যা সবার বিশেষ করে তরুণদের জানা খুবই দরকার। আসুন দেখি সামনে আমাদের কী কী সম্পদ আছে যা বাংলাদেশের উন্নয়নকে বিস্ময়কররকম গতি দিবে!
খুব সংক্ষেপে যদি বলি,
১। যেভাবেই হোক, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিস্ময়ের পরিচয় দিয়েছে। এখন আর কেউ বিদ্যুৎ অফিস ভাংতে যায় না। পুরো দেশের অর্থনীতি যে দারুণরকম গতিশীল হয়েছে তার মূলে কিন্তু এই বিদ্যুৎ। মাত্র ৩৮০০ মেগাওয়াট থেকে মাত্র কয়েক বছরেই এখন ১২,৩৬৫ মেগাওয়াট! ভাবা যায়? যেভাবেই পারুক বিদ্যুৎ সে সামর্থ্যের চেয়ে বেশি দ্রুততম সময়ে সমাধান করেছে। তাই এখন মেগা কর্পোরেটদের সাথে গড়ে উঠছে লাখ লাখ নতুন উদ্যেয়াক্তা। ২০৩০ এ উৎপাদন দাড়াবে ৪০,০০০ মেগাওয়াট, চাহিদা থাকবে ৩৮,০০০ মেগাওয়াট!
বিস্ময়কর উন্নয়নের জন্য যে শক্তি দরকার, সেটা কিন্তু চলে আসতেছে, ক্রমশই বাড়ছে বাংলাদেশের সক্ষমতা।
বিদ্যুৎ তো বাড়ছে তা থেকে কী হবে?
২। আমরা কি খেয়াল করেছি ঠিক ভারতের মতো আমাদেরও কর্পোরেট জায়ান্ট গড়ে উঠেছে? মেঘনা গ্রুপ, ইসলাম গ্রুপ, কনকর্ড, এপেক্স গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, নাভানা, রহিম আফরুজ, সামিট গ্রুপ, কাজি গ্রুপ, সিনহা গ্রুপ, মোহাম্মদি গ্রুপ, হামিম গ্রপ, এনার্জিপ্যাক, বিএসআরএম, মদিনা গ্রুপ, আবুল খায়ের গ্রুপ, একে খান, স্কয়ার গ্রুপ, প্রাণ গ্রুপ, আব্দুল মোনেম, আরো অনেক! – কী বিশাল জায়ান্ট হয়ে উঠছে এরা?
জাপান, আমেরিকার যতো কর্পোরেট সব সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছে। একদিন আমরাও বড় বড় ব্রিজ বানাবো, বড় বড় প্লান্ট আমরাই করবো, আমাদের রাস্তা আমরাই বানাবো।
এগুলো নানাভাবেই গড়ে উঠছে কিন্ত্য এরাই এখন নীতিমালায় আসছে এবং দেশটাকে বিপুলভাবে বদলে দিচ্ছে। এই কর্পোরেটগুলোর শুরু যাই হোক না কেন, আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশে বিস্ময়কর উত্থানে এরা বড় ভূমিকা রাখবে।
এবং এই কর্পোরেটরা বসে নেই।বিদ্যুৎ উতপাদন বাড়ার সাথে সাথে বিশাল বিশাল মেগা প্লান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এরা, যা একদিকে কর্মসংস্থান বাড়াবে, রফতানি আয়ও বাড়াবে অনেক।
এইসব কর্পোরেটরা কী করছে?
৩। ২০১৫-১৬ সালে রফতানির ইতিহাসে একটা দারুণ ঘটনা ঘটেছে! লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি রফতানি হয়েছে। এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও আমরা কিন্তু ম্যাজিক দেখাচ্ছি। বিদ্যুত কিন্তু দারুণ ভূমিকা রেখেছে এই টার্গেট ছাড়িয়ে যেতে! এটা কি থামবে? না্‌ থামবে না!
বড় বড় কর্পোরেটরা এখানে বড় ভূমিকা রেখেছে, তাদের সাথে গড়ে উঠছে লিংকেজ অনেক ইন্ডাস্ট্রি, যা বড় কর্পোরেটের সহযোগি হিসাবে গড়ে উঠেছে। আগামীতে এই ছোট ও মাঝারি সহযোগি ইন্ডাষ্ট্রির বিপুল সম্ভাবনা আছে এবং নতুনদের জন্য এ এক বিশাল সম্ভাবনা।
৪। গার্মেন্টসের সাফল্যের কথা সবাই জানে। ২০২১ পর্যন্ত টার্গেট ৫০ বিলিয়ন ডলার, তার চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সবচেয়ে বড় আশার কথা , দুনিয়ার সব প্রাসঙ্গিক সংস্থা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছে – বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ পোশাক রফতানির দেশ হবে। হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বিশ্বের এই আস্থা এমনিতে এসেছে? আমরা যখন শীর্্ষা পোশাক রফতানি আয়ের দেশে পরিণত হবো, তা কিন্তু হাতে থাকবে দশকের পর দশক!
এতো শিল্প, এই এতো আয় দিয়ে কী হবে?
৫। সরকার সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন বাবদ খরচ ২৪ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫২ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেলো, কিসের ভরসায়? এই যে ঈদে লক্ষ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়, টাকা কোথা থেকে আসে? প্রতিটা উৎসবেই কক্সবাজারসহ পর্যটন এলাকায় লাখ লাখ ছুটে যায়, বিদেশেও যায়! ২৩ লাখ লোক সরকারি চাকুরিতে আছে, বাকি কয়েক কোটি লোক কিন্তু বেসরকারি চাকুরিই করে। বিদেশে আছে এক কোটি প্রবাসি।বেসরকারি খাতের চাকুরি পরিধী বাড়ছে ক্রমশই।
কয়েকলাখ বিদেশী আমাদের দেশ থেকেই ৫-৮ বিলিয়ন ডলার বা তার চেয়েও বেশি আয় করে নিয়ে যাচ্ছে! ভাবুন তো আমাদের সামর্থ্য কোথায় দাড়িয়েছে। আমরা লাখ লাখ বিদেশীকে চাকুরি দিচ্ছি! আমরা এক কোটি প্রবাসী থেকে যে রেমিটেন্স পাচ্ছি, ওরা মাত্র কয়েক লাখ তার অর্ধেকসমান নিয়ে যাচ্ছে!
তার মানে কী? দেশে দক্ষ লোকের চাকুরির অভাব হবে না। আমাদের ১ কোটি প্রবাসী শ্রমিক যার প্রায় পুরোটাই অদক্ষ, তারা যদি দক্ষ হতো, আমাদের রেমিট্যান্স ৪/৫ গুণ বেশি হতো আর দেশেও তাদের একটা বড় অংশের কর্মসংস্থান হতো।
কীভাবে তা সম্ভব?
৬। আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ এখন আমাদের হাতের কাছে চলে এসেছে। জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স (৪৮%) ২৪ এর নীচে। ২৪-১০ এর মধ্যে আছে প্রায় ৩৫%। প্রতি তিনজনের একজন এখন যুবক। অথচ ইউরোপ আর জাপানের জনসংখ্যা কমেছে বিপদসীমা অতিক্রম করে!এই তো সময় বাংলাদেশের!
৭। শুধু কি আমরা? বিশ্বের বড় বড় কর্পোরেটরা বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছে, বিনিয়োগের জন্য উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে।২০১৫-১৬ সালে শুধু কি রফতানিতেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে? আরো একটা ঘটনা ঘটে গেছে। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদেশী বিনিয়োগও এসেছে।
এতো কিছুর যৌথ ফলাফল কী হবে?
৫ কোটি যুবক রেডি! দেশটাকে বদলানোর জন্য!মানুষের স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের হার বাড়ছে। মাছ উৎপাদনে এখন আমরা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে আছি। শুধু ইলিশের উৎপাদন মাত্র কয়েক বছরে ৫০,০০০ টন থেকে ৩,৫০,০০০ টনে উন্নতি লাভ করেছে!জমি কমা সত্ত্বেও কৃষি উৎপাদন অনেক বেড়েছে। দেশ এখন খাদ্যশষ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কতো মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আমরা বাঁচাতে পেরেছি!
তেলের দামের ভয়াবহ ধ্বস আর রিয়েলের দাম কমা সত্ত্বেও রেমিটেন্সে কোন ধ্বস নামে নি। সামান্য কমেছে তবে যা কমার কথা ছিলো , তার তুলনায় অবস্থা অনেক ভালো।
এদিকে লাখ লাখ ছেলেমেয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা শুরু করেছে। ডিজিটাইলেশনের অনেক উপকার আসা শুরু হয়েছে। অনেক কিছুর সময় বেঁচে যাচ্ছে। দেশের কোন প্রান্তে টাকা পাঠানো আজ মুহূর্তের বিষয়! শুনে আশ্চর্য হই যখন শুনি কক্সবাজারের টেইলার্স মালিক কাপড় সেলাই করে নেয় বগুড়া থেকে! দেশের ভেতরের আউটসোর্সিং! লাখ লাখ নতুন উদ্যেয়াক্তা!
আইটি আজ হোক আর কাল হোক, এদেশে দাড়াবেই এবং তা গার্মেন্টস এর আয়কে ছাড়িয়ে যাবেই। এর সুবিধা হলো আইটি শিল্পের জন্য গার্মেন্টসের মতো বিশাল বিশাল অট্টালিকার প্রয়োজন হবে না। ১২০০ স্কয়ার ফুটের রুম থেকেই ১২০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে।
আর কিছু? হ্যাঁ, ঢাকা-চট্টগ্রামের চার লেন কিন্তু চালু হয়ে গেছে। সময় বাঁচবে কোটি কোটি ঘন্টা এবং আরো অনেক সম্ভবনা বাড়িয়ে তুলছে। ভাবুন তো ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইন যদি চার লেনের হয়ে যায়? নিশচয় হবে। আর পদ্মা সেতু?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পদ্মা সেতু আমাদের জিডিপিকে ১-১.৫ শতাংশ যোগ করবে! আচ্ছা এটা যদি ২০ বছর আগে হতো, হয়তো এখনি আমরা জিডিপি ডাবল ডিজিট ছাড়িয়ে যেতে পারতাম!
তো এতো এতো বিশাল প্রস্তুতির এবং সম্ভাবনার ফলাফল কী?
ফলাফল – এক বিস্ময়কর বাংলাদেশ, যে দেশের উন্নয়ন সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিবেই।
এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এক বিস্ময়কর উন্নয়নের পথে।

আমরা আসলে কী চাই?

আমরা আসলে কী চাই? এক মেডিকেল কোচিং সেন্টারের মালিক ডাঃকে ধরা হয়েছে। গত ১৮ বছরে ৪০০০ ছাত্রকে সে পাবলিক মেডিকেলে অবৈধভাবে চান্স পেতে অর্...